নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রায় ১০-১২ বছর ধরে প্রবাস জীবন কাটানো, পরিশ্রমে মোড়ানো কষ্টার্জিত বেতন ও জমানো অর্থ যদি প্রতারক হাতিয়ে নেয়! কেমন হবে?
হাজারো পরিশ্রমে অর্জিত জমানো অর্থ দিয়ে কত স্বপ্ন নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলো কাতার প্রবাসী আনসারুল আছলাম। বাড়ি এসে ব্যবসা করবে, সুন্দর করে নিশ্চিন্তে পরিবার নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিবে।
এত স্বপ্নের মাঝে এক দুঃস্বপ্ন এসে তছনছ করে দেয় তিন প্রবাসীর জীবন।
টাংগাইলের সখিপুর উপজেলার, নলুয়া ইউনিয়নের মোল্লাবাড়ি গ্রামের বাবুল খাঁন নামের এক তীক্ষ্ণ কৌশলী ও ধুরন্ধর প্রতারকের খপ্পরে পড়েন প্রবাসী আনসারুল আসলাম, মোহাম্মদ সোহাগ, আব্দুর রহিম।
বাবুল খাঁনের পিতার নাম আব্দুল গফুর খান। প্রতারক বাবুল খানের কাতার আইডি নং ২৭৫০৫০০০৭৩৫, পাসপোর্ট নং ঊক০৮৩৮৮৯৪।
প্রবাসী আনছারুল আসলামের পিতার নাম হাতেম আলী মুফতি, কাতার আইডি: ২৬৮০৫০০০২৩৩, পাসপোর্ট নং: অ১৪৬২০৮৬৪
স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: তুজলপুর, ইউনিয়ন: যাওডাঙ্গা, থানা ও উপজেলা: সাতক্ষীরা, জেলা: সাতক্ষীরা।
প্রবাসী মোহাম্মদ সোহাগের পিতার নাম: আব্দুল মতিন বেপারী, কাতার আইডি: ২৭৪০৫০০০৭৫৮, পাসপোর্ট নং: ঊঋ০২৭০১৩৩, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: বাইশপুর, ইউনিয়ন: মতলব, উপজেলা: মতলব, জেলা চাঁদপুর।
প্রবাসী আব্দুল রহিমের পিতার নাম: আব্দুল গনি, কাতার আইডি: ২৮৩০৫০০১০০৯, পাসপোর্ট নং: অ১৬৯১৬৬৬৮, স্থায়ী ঠিকানা: পৌর ৯নং ওয়ার্ড, থানা ও উপজেলা: চাঁদপুর, জেলা: চাঁদপুর।
জানা যায়, বাবুল ছিল আনসারুল আছলাম, আব্দুল রহিম ও মোহাম্মদ সোহাগের দশ বছরের পূর্ব পরিচিত। গাড়ি ক্রয়ের জন্য আনসারুল আসলামের কাছ থেকে ১,১২,৫০০/- কাতারি রিয়েল ও মোহাম্মদ সোহাগের কাছ থেকে ৯৯,০০০/- কাতারি রিয়েল ও আব্দুল রহিম এর কাছ থেকে ৪৭,৪০০/- কাতারি রিয়েল নেন বাবুল খান। যা বাংলা টাকায় মোট ৮৭ লক্ষ দারায়। টাকার বিপরীতে জামানত বাবদ কাতার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামী ব্যাংক দোহার ০৩টি চেক প্রদান করে বাবুল। যার নাম্বারগুলো হলো ০০০০০০০৭, ০০০০০০০৮, ০০০০০০০১৩। মূলত এই চেক ছিল প্রতারকের প্রতারণার মূল হাতিয়ার।
এই সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ভুক্তভোগী ০৩ জনের তিনটি অনুলিপি প্রেরণ করা হয়।
আব্দুল রহিমের অনূলিপির বিবরণে জানা যায়,
বিগত ০১ বছর পূর্বে বাবুল খান পিতা আব্দুল গফুর খান গাড়ি কেনার জন্য নেয়া টাকা পরিশোধের জন্য ৩/৪ মাস যাবত বিভিন্ন তারিখ দিয়ে আসছে। সর্বশেষ ২৫ এর জুন মাসে ধারকৃত ৪৭ হাজার ৪০০ কাতারি রিয়েল পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বহুরূপী প্রতারক বাবুল প্রথমে সোমবার পরে শুক্রবার টাকা পরিশোধের কথা বলে, ব্যাগ-ব্যাগেজ যাবতীয় সবকিছু নিয়ে কৌশলে কাতার থেকে পালিয়ে, কাউকে না জানিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে এসে এখন কোন প্রকার যোগাযোগ করছে না এবং ফোনও রিসিভ করছে না।
আনসারুল আসলামের অনূলিপির বিবরণে জানা যায়,
বিগত ০১ বছর পূর্বে বাবুল খান পিতা আব্দুল গফুর খান গাড়ি কেনার জন্য নেয়া টাকা পরিশোধের জন্য ৭/৮ মাস যাবদ বিভিন্ন তারিখ দিয়ে আসছে। সর্বশেষ ২৫ এর জুন মাসে ধারকৃত ১ লক্ষ ১২ হাজার ৫০০ কাতারি রিয়েল পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু চতুর বাবুল প্রথমে সোমবার পরে শুক্রবার টাকা পরিশোধের কথা বলে, ব্যাগ-ব্যাগেজ যাবতীয় সবকিছু নিয়ে কৌশলে কাতার থেকে পালিয়ে, কাউকে না জানিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে এসে এখন কোন প্রকার যোগাযোগ করছে না এবং ফোনও রিসিভ করছে না।
এদিকে প্রতারক বাবুল খানের পক্ষ নিয়ে মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক যার কাতার আইডি ২৬০০৫০০০৩৬৪, পাসপোর্ট নং ইঐ০৯৪৯২৯৮। ৩জন কে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সোহাগ, আব্দুর রহিম, আনসারুল আসলাম এ ধুরন্ধর প্রতারকের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের দাবি এবং ভবিষ্যতে যাতে এরকম প্রতারকের সৃষ্টি না হয় সেজন্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি যানাচ্ছে।
ইমরান হক, রিপোর্টার